Friday, May 10, 2013

বন্ধুরা আসুন জেনে নিই বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ইতিহাস!!


গত মাসটি ছিল ভাষা আন্দোলনের মাসএই মাসের সূত্র ধরে আজ আমরা আমাদের মাতৃভাষা হিসাবে বাংলা ভাষাকে পেয়েছিসাথে পেয়েছি আন্তজার্তিক ভাষা দিবসের সম্মান!! এই মাস উপলক্ষে ব্যতিক্রম একটা পোস্ট করবার চিন্তা মাথাতে আসেবাংলা ভাষা-ভাষি পাঠকদেরে নিজেদের সম্পদ সম্পর্কে জ্ঞাণটাকে আরেকটু সম্বৃদ্ধ করতে আমার আজকের এই পোসটতাই আমি এই পোস্টটি ভাষা শহীদদের উদ্দেশ্য উৎসর্গ করলামআমরা অনেকেই ভূলে যাই কিংবা অদৌ জানিইনা আমাদের সংগ্রহে কত মূল্যবাণ সম্পদ রয়েছেআমাদের অর্জিত সম্পদগুলোর কথা বলতে গেলে যে জিনিসটা প্রতিচ্ছবি সর্বপ্রথম চোখের সামেন ভেসে উঠে সেটি হচ্ছে আমাদের জাতীয় পতাকাপ্রায় ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যা আমরা অর্জন করেছিলাম ১৯৭১ সনে
আসুন আমরা জেনে নিই সেই রক্তের দামে কেনা অর্জিত ইতিহাস!!
বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের প্রতীক বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সবুজ আয়তক্ষেত্রের মধ্যে লাল বৃত্তসবুজ রং বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীকবৃত্তের লাল রং উদিয়মান সূর্য এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীকবাংলাদেশের জাতীয় পতাকার এই রূপটি ১৯৭২ সালের ১৭ই জানুয়ারি সরকারীভাবে গৃহীত হয়১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্যবহৃত পতাকার উপর ভিত্তি করে এই পতাকা নির্ধারণ করা হয়তখন মধ্যের লাল বৃত্তে বাংলাদেশের মানচিত্র ছিলপরবর্তীতে পতাকাকে সহজ করতেই মানচিত্রটি বাদ দেয়া হয়বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা জাপানের জাতীয় পতাকার সাথে মিল রয়েছেকিন্তু পার্থক্য হচ্ছে বাংলাদেশের সবুজের স্থলে জাপানীরা সাদা ব্যবহার করেলাল বৃত্তটি একপাশে একটু চাপানো হয়েছেপতাকা যখন উড়বে তখন যেন এটি পতাকার মাঝখানে দেখা যায়
আদি পতাকাটি এঁকেছিলেন স্বভাব আঁকিয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ছাত্রনেতা শিবনারায়ণ দাশআ.স.ম. আব্দুর রব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ইতিহাসে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ১৯৭১ সালের ২রা মার্চেশেখ মুজিবর রহমান ২৩শে মার্চ তারিখে তাঁর বাসভবনে স্বাধীনতা ঘোষণার প্রাক্কালে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার শিবনারায়ণ দাশের ডিজাইনকৃত পতাকার মাঝে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ ও তার ব্যাখ্যা সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলে পটূয়া কামরুল হাসানকেকামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাপতাকার মাপ
১. বাংলাদেশের পতাকা আয়তাকার
২. এর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ১০:৬ এবং মাঝের লাল বর্ণের বৃত্তটির ব্যাসার্ধ দৈর্ঘ্যের পাঁচ ভাগের এক ভাগ, পতাকার দৈর্ঘ্যের কুড়ি ভাগের বাম দিকের নয় ভাগের শেষ বিন্দুর ওপর অঙ্কিত লম্ব এবং প্রস্থের দিকে মাঝখান বরাবর অঙ্কিত সরল রেখার ছেদ বিন্দু হলো বৃত্তের কেন্দ্র
৩. পতাকার দৈর্ঘ্য ১০ ফুট হলে প্রস্থ হবে ৬ ফুট, লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ২ ফুট, পতাকার দৈর্ঘ্যের সাড়ে ৪ ফুট ওপরে প্রস্থের মাঝ বরাবর অঙ্কিত আনুপাতিক রেখার ছেদ বিন্দু হবে লাল বৃত্তের কেন্দ্রবিন্দু
পতাকা ব্যবহারের মাপ
১. ভবনে ব্যবহারের জন্য পতাকার বিভিন্ন মাপ হলো১০ ফুট ৬ ফুট, ৫ ফুট ৩ ফুট, ২.৫ ফুট ১.৫ ফুট
২. মোটরগাড়িতে ব্যবহারের জন্য পতাকার বিভিন্ন মাপ হলো১৫ ইঞ্চি ৯ ইঞ্চি, ১০ ইঞ্চি ৬ ইঞ্চি
৩. আন্তর্জাতিক ও দ্বিপাক্ষিক অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য টেবিল পতাকার মাপ হল১০ ইঞ্চি ৬ ইঞ্চি
পতাকার ব্যবহারবিধি
১. বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সরকারি ও বেসরকারি ভবন, বাংলাদেশ কূটনৈতিক মিশন ও কনস্যুলেটে পতাকা উত্তোলন করতে হবে
২. শোক দিবসে পতাকা অর্ধনমিত থাকবেপতাকা অর্ধনমিত রাখার ক্ষেত্রে প্রথমে পতাকা শীর্ষস্থান পর্যন্ত ওঠাতে হবেতারপর অর্ধনমিত অবস্থানে রাখতে হবেদিনের শেষে পতাকা নামানোর সময় পুণরায় শীর্ষস্থান পর্যন্ত উঠিয়ে তারপর নামাতে হবে
৩. সরকারের অনুমতি ব্যতীত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা যাবে না
৪. জাতীয় পতাকার ওপর কিছু লেখা অথবা মুদ্রণ করা যাবে নাএমনকি কোনো অনুষ্ঠান উপলক্ষে কিছু আঁকা যাবে না
এইটুকু বলে শেষ করতে চাই যে পতাকার সাথে জড়িয়ে অআছে সালাম, শাফিক, রফিক এবং জব্বারের মত লাখো শহীদের আত্ন বিসর্জনসেই পতাকার সম্মান যেন আমরা অক্ষুন্ন রাখতে পারি এবং সৃষ্টিকর্তা যেন আমাদের মাঝে দেশ প্রেম অটুট রাখার তৌফিক দেনএই আশা ব্যক্ত করে অআজকের মত এখানেই শেষ করলাম



No comments:

Post a Comment