Friday, May 10, 2013

স্মার্টফোন কেনার আগে যা জানার দরকার


 

বর্তমান সময় হল স্মার্টফোনের যুগ।সারা বিশ্বে এখন স্মার্টফোনের জয়জয়কার।প্রযুক্তির উৎকর্ষতার ফলে স্মার্টফোন এখন হাতের মুঠোয়। নানাবিধ সুবিধা থাকার কারনে এর বিক্রি বেড়ে চলেছে ক্রমাগত ভাবে। প্রযুক্তির সর্বশেষ এই সংস্করণ প্রযুক্তিপ্রেমী আগ্রহের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। হাল ফ্যাশন এর তরুণদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আপনার কম্পিউটারের অনেক কাজও এতে করা যায়। একে কম্পিউটারের মোবাইল সংস্করণও বলা যায়। আপনিও স্মার্টফোনের একজন গর্বিত মালিক হতে পারেন। কিন্তু স্মার্টফোনের সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা না থাকায় অনেকে স্মার্টফোন কিনতে পারছেন না।তাদের জন্য আমার আজকের এই ব্লগ। আসুন জেনে নেয়া যাক কি কি বিষয় স্মার্টফোনের কেনার ক্ষেত্রে যাচাই বা জেনে নিবেনঃ

প্রসেসরঃ স্মার্টফোনের প্রধান সবচে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল প্রসেসর। প্রসেসর আপনার স্মার্টফোনের মূল অংশ যা স্মার্টফোনকে নিয়ে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। প্রসেসর ছাড়া স্মার্টফোন অর্থহীন। তাই স্মার্টফোন কেনার আগে জেনে নিন আপনার পচ্ছন্দের স্মার্টফোনের প্রসেসর সম্পর্কে। অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে যে প্রসেসরের ক্লক স্পীড- আসল। ক্লক স্পীড গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি প্রধান নিয়ামক নয়। প্রসেসরের ভার্সন- আসল। তাই স্মার্টফোনের কিনার আগে জেনে নিন প্রসেসর এর ভার্সন কত। চেষ্টা করুন ARMv7 বা তার পরবর্তী Model এর প্রসেসর সমৃদ্ধ স্মার্টফোন কিনতে। কারন ARMv7 পূর্ববর্তী Model এর প্রসেসরগুলো অনেক অ্যাপলিকেশন,গেমস্ বিশেষ করে ফ্ল্যাশ সাপোর্ট করে না ফলে আপনার স্মার্টফোনের মূল মজাটাই নষ্ট হয়ে যাবে।যেমন Samsung Galaxy Y, Galaxy pocket, Galaxy  Ace ইত্যাদি মোবাইলে ক্লক স্পীড বেশী থাকলেও এই ফোনগুলোর ARM ভার্সন হল 6 তাই এই ফোনগুলো অনেক আপ্লিকেশন বিশেষ করে ফ্ল্যাশ ভিত্তিক কিছুই চলে না।আর যাদের আর্থিক সামর্থ্য আসে তারা ডুয়েল-কোর(dual-core) বা কোয়ার্ট-কোর(Quad-core)  প্রসসর সমৃদ্ধ স্মার্টফোন কিনতে পারেন
RAM: স্মার্টফোনের আরেকটি অপরিহার্য অংশ হল RAM এর ক্ষমতা।RAM যত বেশী হবে কাজের performance আর স্পীড দুইই বাড়বে। তাই কেনার আগে RAM  কত তা দেখে নিন। তবে বর্তমানে বেশিভাগ স্মার্টফোনের RAM  ৫১২ মেগাবাইট বা তার বেশী হয়
মেমোরি(memory): স্মার্টফোন কেনার আগে দেখে নিন মেমোরির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা কত।স্মার্টফোনের মেমোরি দুই ধরনের হয়ঃ
)Phone memory/internal memory
)Card slot/External memory
প্রায় সব স্মার্টফোনে মেমোরি কার্ড লাগানো গেলেও দেখে নিন সর্বোচ্চ কত পর্যন্ত তা সাপোর্ট করে বিশেষ করে internal memory কত তা জেনে নিন। কারণ বেশী ভাগ আপ্লিকেসন এই internal memory তেই থাকে
ডিসপ্লে(Display): বর্তমানে প্রায় সব স্মার্টফোনই টাচস্ক্রীন ডিসপ্লে। যদি টাচস্ক্রীন স্মার্টফোন নেন সে ক্ষাত্রে চেষ্টা করবেন ডিসপ্লে আকার যেন . ইঞ্চি বা তার বেশী হয়।কারণ এতে ব্যবহারে অনেক বেশী আরামদায়ক এবং দেখতেও সুবিধা। তবে আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখবেন যেমন রেজু্লেশন, পিক্সেল পার ইঞ্চি(PPI),কালার ইত্যাদি। আর টাচস্ক্রীন যেন অবশই capacitive  হয়।কারণ Resistative স্ক্রীন ব্যবহারে  খুব অসুবিধাজনক যা আপনাকেই সমস্যায় ফেলবে
গ্রাফিক্স প্রসেসর ইউনিট(GPU): অনেকেই গ্রাফিক্স প্রসেসর ইউনিট(GPU) সম্পর্কে অবহিত নয় অথচ এটি ছাড়া আপনি হাই গ্রাফিক্স এর কোন গেমস  খেলতে পারবেন না। অনেক সেট বিল্ট-ইন GPU থাকলেও তার পারফরমেন্সে অত ভাল না যেমনঃ Samsung Galaxy Y, Galaxy  Pocket, Galaxy Ace ইত্যাদি
সেন্সর(Sensor): বর্তমান সকল স্মার্টফোনে বিভিন্নও ধরনের সেন্সর থাকে যা দ্বারা আপনি স্মার্টফোনের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা ভোগ করবেন। বর্তমানে বহুল ব্যবহারিত সেন্সরগুলো হলঃ
)Accelerometer Sensor
)Gyro sensor
)proximity sensor
)Compass
প্রত্যেক সেন্সরের কাজ ভিন্ন এবং সেট এর মডেল অনুযায়ী সেন্সর এর সংখ্যা কম বেশী হতে পারে
অপারেটিং সিস্টেমঃ স্মার্টফোনের আরেকটি অসাধারণ বৈশিষ্ট্য হল এর অপারেটিং সিস্টেম। কম্পিউটারের মত প্রত্যেক স্মার্টফোন এর রয়েছে একটি  নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে যেমনঃ
) Android
)  iOS(শুধু Apple এর জন্য)
) Windows
) RIM(শুধু Black Berry এর জন্য)
) Symbian
তবে বর্তমানে Android অপারেটিং সিস্টেম সবচে জনপ্রিয়।তবে অপারেটিং সিস্টেম যাই হোক চেষ্টা করবেন সবচে নতুন সংস্করনে চলে এমন সেট নেওয়ার, অন্তত যাতে সর্বশেষ ভার্সনটি update করা যায়
ক্যামেরাঃ বাঙালি ক্যামেরা বলতে মেগা পিক্সেলকে বুঝলেও এটি ক্যামেরার প্রধান দিক নয়।মেগাপিক্সেল ছাড়াও লেন্স এর সেন্সর,ছবির রেজু্লেসন,অটোফোকাস,ফ্ল্যাশলাইট,geo-tagging, face detection ইত্যাদি আসে কিনা সে সম্পর্কে জেনে নিন। এছাড়া ভিডিও কোয়ালিটি,Secondary ক্যামেরা আসে কিনা জেনে নিন।তবে ক্যামেরা মেগাপিক্সেলই যথেষ্ট
ব্যাটারিঃ স্মার্টফোন কেনার সময় খেয়াল রাখবেন ব্যাটারির mAh যেনও বেশী হয় কারণ ব্যাটারির যত mAh বেশী হবে চার্জ তত বেশী থাকবে
অন্যান্য কিছু বিষয়ঃ সকল বিষয় ছাড়াও আরও বেশ বিষয় আপনার খেয়াল রাখা উচিত আর তা হলঃ
-SAR value যেন কোন ভাবে এর বেশী না হয়।এর বেশী হলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর
-সাউন্ড সিস্টেম এর মান(SRS amplifier, beats audio ইত্যাদি)
-Bluetooth এর ভার্সন , Wi-Fi গতি  ইত্যাদির
সবার শেষে আশা করি আপনার প্রথম স্মার্টফোনটি হোক সময়ের সেরা। আর যারা এখনও স্মার্টফোন কিনেননি বা কিনার চিন্তা করছেন না তাদের বলেদুনিয়া স্মার্ট হচ্ছে,আপনি হচ্ছেন কবে?”

No comments:

Post a Comment