Sunday, May 26, 2013

৪ দশক পেরিয়ে সেলফোন || কতোটা পাল্টে দিতে পেরেছে আমাদের জীবন যাত্রা?


সেলফোন সম্বন্ধে এখন আর কোন কিছু চিন্তা না করেই একে আমাদের প্রতিমুহূর্তের সঙ্গী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা যায়। আজ কিছু আলোচনা করবো আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী এই মোবাইলকে নিয়ে।
history-of-cell-phones-2
মোবাইলফোনের ইতিহাসঃ 
সবকিছুরি কোন না কোন ইতিহাস আছে। আমাদের পৃথিবী সৃষ্টির যেমন ইতিহাস আছে ঠিক তেমনি আছে মোবাইলফোন সৃষ্টিরো একটি ইতিহাস। তবে সময় স্বল্পতার কারনে আমি সম্পূর্ণ ইতিহাস এখানে তুলে ধরতে চাইছি নাহ। আর যেহেতু Wikipedia তে বিস্তারিত আছেই তবে সেখানেই দেখা যাক।  
40Years-Cooper
সময়টা ৩ এপ্রিল ১৯৭৩ সাল। বিশ্ববিখ্যাত কোম্পানি মট্ররলা (Motorola)  নিয়ে আসে আমাদের জন্য একটি হাতে নিয়ে ঘুরা যায় এমন সুবিধাভিত্তিক মোবাইল ফোন। যা কিনা আমরা আমরা পেয়েছি Motorola কোম্পানির engineer and executive “ Martin Cooper” এর অবদানে।
মোবাইলটির তখনকার ওজন ছিল প্রায় ২.৫ পাউন্ড এবং লম্মবায় ছিল ৯ ইঞ্চি! ৫ ইঞ্চি গভির ও ১.৭৫ ইঞ্চি চওড়া :D
আজ এই মুহূর্তে ৪ দশক পরঃ 
না আপনার জীবনযাত্রা ৪০ বছর আগের ২.৫ পাউন্ডের কোন মোবাইল ফোন পাল্টে দিতে সক্ষম ছিল নাহ। এই পাল্টে যাওয়ার মুহূরূর্তটা শুরু হয়েছে গত ১০-১৫ বছর ধরে। তবে উৎপত্তিটা শুরু হয়েছিল সেখান থেকেই।
14415805-cell-phone-man-character-giving-a-thumbs-up
আর আজ ৪০ বছর পর এসে মোবাইল ছাড়া চলার কথা আমরা ভাবতেও পারি নাহ। আজ ছোট-বড় সবার কাছেই মোবাইল দেখতে পাওয়া যায়। তা বিত্তবান থেকে শুরু করে নিম্নআয়ের মানুষ পর্যন্ত।
আজ আমাদের বিশেষ কোন কারন ছাড়া ব্যবহার করতে হচ্ছে নাহ চিঠি। আমাদের দূরদূরান্ত থেকে সংবাদ পৌছাতে আসতে হচ্ছে নাহ সমুদ্র পেরিয়ে। অপেক্ষা করতে হচ্ছে নাহ একটি জবাবের আশায় দিনের পর দিন।
0913ccd2ba527c520c96a132ae464d30
“মোবাইল” শুধুই কি কথা বলার যন্ত্র?ঃ 
কিছুদিন আগেও উত্তর ছিল হ্যাঁ। মোবাইল হচ্ছে কথা বলার যন্ত্র। যা দ্বারা আমাকে  দিতে হচ্ছে না কারো সাথে যোগাযোগ করতে বহু ক্রোশ পারি :) ।
হ্যাঁ আমাদের এখন আর বহু পথ হেটে বহু ক্রোশ দূরে যেতে হয় নাহ কারো সাথে কথা বলার জন্য। এছাড়াও আমাদের এখন আর আরো অনেক কিছুর জন্যই কষ্ট করতে হয় নাহ । আসছি সেসব কথার কিছু ছোট্ট উদাহারন নিয়ে ;) ।
cell-phone
সাথেই আছে ক্যামেরাঃ
brando-mobile-phone-camera-telescope
হ্যাঁ এখন আমাদের সাথেই থাকে ক্যামেরা। এখন আর আমাদের কোন অনুষ্ঠানে এক্সট্রা কোন ক্যামেরা নিতে হয় নাহ। ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে বাড়তি ঝামেলা তো নিতেই হয় নাহ সাথে আর নেই পুরনো দিনের ফ্লিম ক্যামেরার কথা নাই বললাম। যেটাতে কিনা ১১৫ টাকা করে ফ্লিম কিনে ঢুকাতে হতো ৩০/৩৬ টি ছবি উঠানোর জন্য :( ।
DSC02166
মোবাইল মাল্টিমিডিয়া (একের ভেতর অধিক)ঃ 
অডিও, ভিডিও আর এফএম প্লেয়ারের কথা নাই বললাম। এখন মোবাইলে টিভি পর্যন্ত দেখা যায়। এখন আর কাওকে কিনতে হয়না টেপ রেকর্ডার, সিডি/ডিভিডি প্লেয়ার। আমার এখনো মনে আছে এইতো সেদিন আমি নিজেই অডিও/ভিডিও শুনার/দেখার জন্য সিডি/ডিভিডি কিনেছি। আর এফএম শুনার জন্য কিনেছিলাম ১৩০ টাকা দামের ছোট্ট রেডিও :D  
mobile-multimedia-vector-743335
আর এখন? এখন আমাদের কোন কিছু আলাদা করে শুনার জন্য আলাদা আলাদা কিছুই কিনতে হচ্ছে নাহ। হচ্ছে নাহ এক্সট্রা কোন রেডিও/ডিভিডি বা MP3 প্লেয়ার কেনার। আজ মাত্র ২৫০০ টাকার মধ্যেই আমি ভালো কোয়ালিটির একটি মোবাইলেই এসব কিছু পেয়ে যাচ্ছি :) ।
মোবাইলে সোশিয়াল নেটওয়ার্কিংঃ
Mobile-social-media
মোবাইলে এখন আমরা বিশ্ব ঘুরি। যোগাযোগ রক্ষা করি বিভিন্ন সোশিয়াল নেটওয়ার্কে। আমাদের দেশের বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারি এই মোবাইল থেকেই ইন্টারনেট ব্রাউজ করে থাকে। হয়তো আমার এই লেখাটিও অনেকে মোবাইল দ্বারাই পড়ছেন।
শুধুই কি মাল্টিমিডিয়া আর সোশিয়াল নেটওয়ার্কিং??ঃ 
তা হবে কেন? এই বিশ্বে মোবাইল দ্বারা আরো অনেক কাজ হচ্ছে। তবে  মাল্টিমিডিয়া আর সোশিয়াল নেটওয়ার্কিং  টাই বেশি হচ্ছে বিধায় সর্বপ্রথম এই বিষয় টা চলে আসছে। চলুন দেখে নেই মোবাইল দ্বারা এই বেস্তময় জীবনে আরো কিছু কাজের উদাহারনঃ
১/ আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্ট এখন চেক করতে পারছেন আপনার মোবাইল দ্বারাই। আপনাকে আর কষ্ট করে ব্যাংকে যেতে হচ্ছে নাহ আপনার একাউন্টে কতো এমাঊন্ট আছে তা জানার জন্য।
Mobile-banking
২/ আপনাকে এখন আর ট্রেন,বাস অথবা খেলার টিকিট কাটবার জন্যও বিরক্তিকর লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে নাহ। বিভিন্ন ফোন কোম্পানিই আপনাকে দিচ্ছে আপনার মোবাইল দ্বারা এইসব সুবিধা ভোগকরার উপায় বাতলে।
৩/ আজকাল তো লাইট/ফ্যান ,কম্পিউটার চালু করা সহ গাড়িও চালনা করা যাচ্ছে মোবাইলের কিছু বিশেষ এপ্লিকেশন এর মাধ্যমে।
আর এভাবে যদি বলতে থাকা হয় তবে কতোটা সময় যে মোবাইলের গুণগান করতে হবে এ সম্পর্কে বলা আসলেই সম্ভবনয়। মূলত আমরা বুঝতে চেয়েছিলাম যে ৪ দশক পেরিয়ে আজ এই মোবাইল আমাদের জীবনের সাথে কতোটা জড়িয়ে গিয়েছে।
অবশেষে সারমর্ম এটাই যে আমাদের জীবনের সাথে মোবাইল এতোটাই জড়িয়ে গেছে যে আমাদের মোবাইল থেকে দূরে থাকা আসলেই সম্ভব নয়। আর এই উন্নত বিশ্বে মোবাইল থেকে আমরা দূরে থাকতেও চাই নাহ। আমরাও এগিয়ে যেতে চাই সকলের সাথে তালমিলিয়ে। অযথা পিছিয়ে থাকার কোন মানে হয় নাহ :) ।
শেষে একটি কথা বলতে চাই যে। এই ব্লগিং দুনিয়ায় আমি একজন নতুন পাপী। আমার অনেক ইচ্ছের মধ্যা একটি ইচ্ছে ভালো একজন ব্লগার হওয়া। ব্লগিং আসলেই আমার অনেক পছন্দের। আমি যতোটা সম্ভব ভালো কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। আশা করছি কোনএকদিন আপনাদের প্রিয় একজন ব্লগার হতে পারবো ইনশাল্লাহ :D  

No comments:

Post a Comment